দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নারী উদ্যোক্তা লুনা শামসুদ্দোহার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ওমেন ইন আইটি এবং বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সহযোগিতায় বিশেষ স্মরণসভা করেছে বেসিস।

লুনা শামসুদ্দোহা তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান দোহাটেক নিউ মিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়া জনতা ব্যাংকের প্রথম নারী চেয়ারম্যান ছিলেন। বাংলাদেশ ওমেন ইন টেকনোলজির (প্রযুক্তিতে বাংলাদেশি নারী) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক পরিচালক ছিলেন।

সম্প্রতি বেসিস মিলনায়তনে আয়োজিত ‘লুনা শামসুদ্দোহার স্মরণসভা’ শীর্ষক সভায় বেসিসসহ সরকারি-বেসরকারি খাতের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

স্মরণসভায় বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, ‘আমি লুনা শামসুদ্দোহার মতো অত্যন্ত অমায়িক, বিনম্র এবং সদা হাস্যোজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব খুবই কম দেখেছি।’ এছাড়া বেসিস নির্বাচনের অংশগ্রহণ করার অন্যতম কারণ হিসেবে তিনি শ্রদ্ধাভরে লুনা শামসুদ্দোহাকে স্মরণ করেন।

স্মরণসভায় বেসিস সভাপতি ঘোষণা করেন যে, লুনা শামসুদ্দোহা-কে উৎসর্গ করে আগামী ৮ মার্চ এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হবে এবং বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা ও পেশাজীবীদের তার নামে পুরস্কার প্রদান করা হবে। প্রতিবছরই লুনা শামসুদ্দোহা-র নামে এই অ্যাওয়ার্ড দেয়া হবে এবং বিআইটিএম-এ লুনা শামসুদ্দোহার নামে একটি ল্যাব চালু করা হবে বলেও তিনি জানান।

স্মরণসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ওমেন ইন টেকনোলজির সভাপতি ডা. লাফিফা জামাল এবং বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান।

লুনা শামসুদ্দোহা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তার ব্যাপক অবদানের জন্য ২০১৭ সালে বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন এবং সফটওয়্যার শিল্পে তার সম্পৃক্ততার জন্য অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার পান। তার নেতৃত্বের ভূমিকার কারণে, তিনি সুইডেনের স্টকহোমে গ্লোবাল উইমেন ইনভেন্টরস অ্যান্ড ইনোভেটরস নেটওয়ার্ক থেকে অনারারি লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০১৩ লাভ করেন। এছাড়াও তিনি প্রযুক্তি, ই-গভর্নেন্স এবং নারীর অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ এবং ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন বৈশ্বিক ফোরামে সুপরিচিত।

লুনা শামসুদ্দোহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৭৮ সালে একজন পরামর্শক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং ১৯৮৫ সালে এক্সিকিউটিভ সেন্টারের ব্যবস্থাপনা অংশীদার হিসেবে ব্যবসা শুরু করেন। এর আগে, তিনি ব্রিটিশ কাউন্সিল ল্যাঙ্গুয়েজ রিসোর্স সেন্টারে একজন ইংরেজি ভাষার শিক্ষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ইনস্টিটিউট অব মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজে প্রভাষক হিসেবে কাজ করেছেন।